ইমাম খাইর, পবিত্র মক্কা থেকে লিখছি:
হেরা (আরবি: حراء‎‎ Ḥirāʾ ) বা হেরা গুহা (غار حراء Ġār Ḥirāʾ ) সৌদিআরবের মক্কায় জাবালে নূর পর্বতে অবস্থিত একটি গুহা।
সর্বপ্রথম কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার স্থান হিসেবে এই গুহা প্রসিদ্ধ।
শবে কদরে আল্লাহর তরফ থেকে ফেরেশতা জিবরাইল এই গুহায় সর্বপ্রথম মুহাম্মাদ (সা) এর কাছে কুরআনের বাণী নিয়ে যান। বক্ষ বিদীর্ণ করে তাকে আরো শক্তিমান করেন।
গুহাটি ৩.৭ মি (১২ ফুট) দীর্ঘ। ১.৬০ মি (৫ ফুট ৩ ইঞ্চি) প্রশস্ত। এটি পর্বতের ২৭০ মি (৮৯০ ফুট) উচুতে অবস্থিত। দূর্বল প্রকৃতির কোন লোক এই পাহাড়ে আরোহন করা দায়। অনেক সময় শক্তিশালী লোকদের বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে পাহাড়ের শিখরে পৌঁছতে হয়।
পাহাড়ে ওঠানামা দু’টিই কম ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
আলহামদুলিল্লাহ। সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।
১৭ জুন সন্ধ্যায় হেরা পর্বতে ওঠতে সক্ষম হই। স্বচক্ষে অবলোকন করি বিশ্বনবী (স.) ধ্যানমগ্ন থাকার স্থান। পর্বতের পাথরের গায়ে বিভিন্ন সুরা ও আরবী ক্যালিওগ্রাফি অংকন করা হয়েছে। পথে পথে পরিচ্ছন্নকর্মীও রয়েছে।
ওখানে মাগরিবের নামাজ জামাতে আদায় করে নিরাপদে নেমে পড়ি।
হেরাগুহায় আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকতেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। এই গুহায় নবীজি ৪০ বছর বয়সে নবুয়ত লাভ করেন। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ পবিত্র কোরআন শরিফও এ গুহাতেই নাজিল হয়।
পাথর কেটে কেটে পাহাড়ের সিঁড়ি বানানো হয়েছে। কোথাও কোথাও পাইপ বা রডের রিলিং দেয়া আছে।
পায়ে হেঁটে পাহাড়ে ওঠতে হয়। অনেকে কিছু দূর গাড়ি নিয়ে ওঠেন। বাকিটা পায়ে হেটে উঠতে হয়।
বিবি খাদিজা (রা.) নবীজির জন্য প্রতিদিন খাবার নিয়ে যেতেন হেরাগুহায়।
বছরের পর বছর ধ্যানের পর চল্লিশ বছর বয়সে রমজান মাসের পবিত্র শবে কদরে হঠাৎ আলোকিত হয়ে উঠে অন্ধকারাচ্ছন্ন হেরা গুহা।
এ রাতেই হযরত জিবরাইল (আ.) ওহি নিয়ে অবতীর্ণ হন। বললেন, হে নবী পড়ুন। পড়ুন আপনার রবের নামে, যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন।
জিবরাইল (আ.) সুরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত পাঠ করে শুনান।
মুলতঃ এটা ছিল হযরত মুহাম্মদ (স.) নবুয়ত লাভের সময়। নবুয়ত লাভের পর হযরত মুহাম্মদ (স.) উম্মতদের শিক্ষা দিলেন, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। ইবাদত করতে হবে একমাত্র তাঁরই। তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরীক নেই।